নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা দ্বিতীয় ধাপ মোকাবেলায় মাস্ক ব্যবহারের উপর দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব। কিন্তু অফিস ছাড়া বরিশালের আর কোথাও মাস্ক ব্যবহার নেই বললেই চলে। করোনা সচেতনতা শুধু যেন সভা-সেমিনার আর বক্তব্যে সীমাবদ্ধ। এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং দাবি করেছেন সচেতন মহল। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিলেও বাড়ছে না সাধারণ মানুষ অনেকটাই উদাসীন। বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। প্রশাসনের ভয়ে অনেকে মাস্ক সাথে রাখলেও তা ব্যবহার করছেন না। ফলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হাসপাতালে রোগী বেড়েছে কয়েকগুণ। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) করোনা ইউনিটে গত সপ্তাহে ১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলেও শনিবার পর্যন্ত তা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও বিপনী বিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। যদিও বরিশাল জেলা প্রশাসন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন করোনা বিস্তাররোধে কাজ করছে। কিন্তু তাদের সচেতনতা বার্তা, কঠোর নজরদারি কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না সাধারণ মানুষ। বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক ব্যবহার না করে কানে/থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখে। এছাড়া নিরাপদ দূরত্ব না মেনেই দৈনন্দিন কাজকর্ম করে যাচ্ছেন তারা। নগরীর বিভিন্ন শপিংমল, জামা-কাপড়ের দোকান, কাঁচাবাজার এবং ফুটপাতের ব্যবসায়ী কারো মুখেই মাস্ক নেই। একই হাল বিক্রেতাদেরও। অনেককেই রাস্তার পাশে চায়ের দোকান ও হোটেল রেস্তোরায় আড্ডা দিতে দেখা যায়। কেউবা আবার সন্তান কোলে নিয়েও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাফেরা করছেন। রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডের পাশে চায়ের দোকানে আড্ডারত যুবক সোহেল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য মাস্ক পরা উচিত কিন্তু মাস্ক পরলে মুখ ঘেমে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়। তাই মাস্ক ছাড়াই চলাচল করি।
নগরীর চকবাজারে কসমেটিক্স কিনতে আসা এক তরুণী বলেন, আমি মাস্ক পরে এসেছি, কিন্তু সবাইতো আর মাস্ক পড়ছেন না। আমাদের সবারই এ সময় একটু সাবধান হয়ে চলাফেরা করা উচিত। হাসপাতাল রোডের ওষুধ বিক্রেতা আরিফুর রহমান বলেন, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং একসঙ্গে দুই জনের বেশি দোকানে প্রবেশে নিষেধ করলেও অনেকেই এসব কথা শুনছে না। বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী সুজা বলেন, এতে অভিযান আর সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পরও মানুষের মধ্যে মাস্ক পরিধানে অনিহা লক্ষ্য করছি। এজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হচ্ছে। বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, আমার আহ্বান থাকবে সব যায়গায় সকল মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, আমরা নগরীর প্রায় সব স্থানেই করোনা সতর্কমূলক পোস্টার, লিফলেট, ফেস্টুন দিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করছি। নিজের জীবনের অথবা পরিবারের স্বার্থে হলেও মাস্ক পরাটা খুবই জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে আইনের কঠিন প্রয়োগ করবো। তাছাড়া চলমান ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply